অতিরিক্ত কৃষি অফিসার দূর্গাপুর কৃষিবিদ পাপিয়া রহমান মৌরীর পরিচালনায় গত ০৯ জুলাই২০১৮ দূর্গাপুর উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ চত্তরে ৩ দিন ব্যাপী ফলদ বৃক্ষ মেলা উপজেলা র্নিবাহী অফিসার দূর্গাপুর মোঃ আনোয়ার সাদাত এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এবার মেলার প্রতিবাদ্য বিষয়, “অপ্রতিরোধ দেশের অগ্রযাত্রা, ফলে পুষ্টি যোগাবে নতুনমাত্রা”।
ফলদ বৃক্ষ মেলায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী-৫, (পুঠিয়া-দূর্গাপুর) আসনের মানণীয় সংসদ সদস্য ও সভাপতি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থাযী কমিটি মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা । বিশেষ অতিথি ছিলেন, দূর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নজরুল ইসলাম, দূর্গাপুরের পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোঃ নাজমুল আলম ও দূর্গাপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি এস এম সামসুল ইসলাম।
“অপ্রতিরোধ দেশের অগ্রযাত্রা, ফলে পুষ্টি যোগাবে নতুনমাত্রা”এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে উদ্বোধনীর শুরুতে সূধীবৃন্দের শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানিয়ে ফলদ বৃক্ষ মেলার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন উপজেলা কৃষি অফিসার দূর্গাপুর কৃষিবিদ ড. বিমল কুমার প্রামানিক। তিনি বলেন কৃষক তথা সকল স্তরের জনগন এই ঐতিহ্যবাহী মেলার মাধ্যমে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় ফলদ বৃক্ষের অবদান ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সম্পর্কে সহজে নতুন নতুন ধ্যান-ধারণা নিতে পারবে। তিনি মেলায় উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।পরিশেষে তিনি উপস্থিত সকলকে মেলা থেকে যে কোন ২টি বৃক্ষের চারা সংগ্রহ করে রোপন করার অনুরোধ জানান।
উদ্বোধনীর প্রধান অতিথি বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদার অন্যতম হচ্ছে খাদ্য। ক্রমহ্রাসমান জমি থেকে ক্রমবর্ধমান মানুষের খাদ্যের যোগান দেয় কৃষি। তাই মানুষের খাদ্য চাহিদা মিটানোর লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সময় উপযোগী ফলদ ও বনজ বৃক্ষ মেলা কৃষকসহ আপামর জনসাধারনকে উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগাতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তিনি ফলদ ও বনজ বৃক্ষের অবদানের কথা বলেন, ফল একটি স্বাস্থ্য রক্ষাকারি খাদ্য। যে কোন ফলে প্রচুর পরিমানে খনিজ লবণ, শর্করা ও যথেষ্ঠ পরিমানে ভিটামিন থাকে যা মানুষের দেহে শক্তি সরবরাহ ও দৈহিক গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখে। কাজেই প্রতিদিন কিছু না কিছু যে কোন ধরনের ফল খেতে হবে আর এজন্য বাড়িতে যে কোন ফলের গাছ থাকা প্রয়োজন। তিনি বনজ বৃক্ষের অবদানের কথা বলেন, বৃক্ষ শুধু আমাদের শর্করা, প্রোটিন, স্নেহ, ভিটামিন এবং খনিজ লবনের চাহিদাই পূরন করে এবং জীবন রক্ষাকারি অক্সিজেন, জ্বালানী কাঠ, কাগজ তৈরীর কাঁচামাল, মাটি ক্ষয়রোধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করে পরিবেশ রক্ষা করে। কাজেই সবাইকে ফলদ, বনজ ও ঔষুধি বৃক্ষ রোপনে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। তিনি উপস্থিত সকল স্তরের মানুষকে মেলা পরিদর্শণ ও মেলা থেকে কৃষি প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও নতুন নতুন ধ্যান ধারনা গ্রহনের পাশাপাশি ৩টি করে ফলদ, বনজ ও ঔষধী বৃক্ষের চারাা সংগ্রহ করে রোপণ করার জন্য আহবান জানান।
সভাপতি মহোদয় বলেন, বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু। জীবন রক্ষাকারী অক্সিজেন বৃক্ষ থেকে আমরা পেয়ে থাকি। বৃক্ষ ও মানুষের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। তাই আমাদের উচিৎ বেশী করে বৃক্ষ রোপণ করা। তিনি আরোও বলেন, আমাদের প্রতিদিন যে পরিমান ফল খাওয়া দরকার তা ফলের অভাবে খেতে পারি না। তাই তিনি বৃক্ষ মেলা থেকে বিভিন্ন জাতের কমপক্ষে ৩টি করে ফলদ বৃক্ষের চারা সংগ্রহ করে রোপণ করার জন্য অনুরোধ জানান ও অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন।
৩দিন ব্যাপী ফলদ বৃক্ষ মেলায়, বন বিভাগ, বি এম ডি এ, ব্যাক্তিমালিকানাধীন নার্সারীসহ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে বসত বাড়ীতে সবজি চাষ, আই পি এম পদ্ধতি, বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় প্রজাতির ফল প্রদর্শন বিষয়ক স্টলসহ ২৪টি স্টল অংশ গ্রহন করে। উদ্বোধনী পর্বে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারী ছাড়াও প্রায় ৫৫০ জন কৃষক কৃষানী উপস্থিত ছিলেন।